অনলাইন ডেস্ক ॥
গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যার ঘটনায় নিহতের বড় ভাই বাদী হয়ে মহানগরীর বাসন থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
মামলা সত্যতা নিশ্চিত করে বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো. শাহীন খান বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতেই নিহতের বড় ভাই মো. সেলিমঅজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।’
এরই মধ্যে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের সনাক্ত এবং গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে বলে ওসি শাহীন খান জানান।
নিহতের বড় ভাই মো. সেলিম জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তার ভাই আসাদুজ্জামান তুহিন চান্দনা চৌরাস্তা থেকে তার বাসায় যাচ্ছিলেন। এ সময় ৬ থেকে ৭ জন সন্ত্রাসী দা চাপাতি দিয়ে তাকে জনসম্মুখে ধাওয়া করেন। তিনি প্রাণ বাঁচাতে দৌড়ে পার্শ্ববর্তী ঈদগাহ মার্কেটের চা পান বিক্রেতা খাইরুল ইসলামের দোকানে গিয়ে আশ্রয় নেন। সন্ত্রাসীরা সেখানে গিয়ে তাদের সঙ্গে থাকা ধারাল অস্ত্র দিয়ে তুহিনের কাঁধে, পিঠে ও গলায় এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও জবাই করে মৃত্যু নিশ্চিত করে ঘটনাস্থল থেকে বীরদর্পে পালিয়ে যান।
তিনি অভিযোগ করেন, ঘটনার সময় আশেপাশে শত শত লোকজন থাকলেও তুহিনকে বাঁচাতে কেউ এগিয়ে আসেননি।
এর আগে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (অপরাধ দক্ষিণ) মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম জানান, চাঁদাবাজির ভিডিও লাইভ নয়, বাদশা নামে এক ব্যক্তির ওপর হামলার ভিডিও ধারন করায় সন্ত্রাসীরা সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে খুন করেছেন।
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গাজীপুর চৌরাস্তা মসজিদ মার্কেটের সামনে এক নারী বাদশা নামে এক ব্যক্তিকে ট্র্যাপে ফেলার চেষ্টা করেন। এ সময় ওই ব্যক্তি নারীর ট্রাপে না পড়ে সেই নারীকে থাপ্পড় দেন। তার কিছুক্ষণ পর ওই নারী কয়েকজন সন্ত্রাসীকে নিয়ে বাদশার ওপর হামলা চালান। এই ঘটনার ভিডিও সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন তার মোবাইল ফোনে ধারন করায় সন্ত্রাসীরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে চাপাতি রামদা দিয়ে কুপিয়ে ও জবাই করে খুন করে পালিয়ে যান।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী বাদশা বলেন, ‘গাজীপুর চৌরাস্তা পার হওয়ার সময় এক নারী পূর্ব থেকেই তাকে টার্গেট করেন। তার সঙ্গে থাকা টাকা পয়সা নিতে চাইলে তিনি ওই নারীকে বাধা দেওয়ার এক পর্যায়ে আঘাত করেন। এ সময় ওই নারীর ৫ থেকে ৬ জন সহযোগী ঘটনাস্থলে এসে তাদের সঙ্গে থাকা দা চাপাতি দিয়ে আমার ওপর হামলা করেন। এ সময় আমি আহত অবস্থায় দৌড়ে পালিয়ে যাই।’
উল্লেখ্য, গতকাল রাত ৮টায় গাজীপুর চৌরাস্তা মসজিদ মার্কেট এলাকায় দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার আসাদুজ্জামান তুহিনকে কুপিয়ে ও জবাই করে খুন করেন সন্ত্রাসীরা।
এই ঘটনার পরপরই গাজীপুরের সাংবাদিকদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। সাংবাদিকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা অনতিবিলম্বের সাংবাদিক মো. আসাদুজ্জামান তুহিনের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানান।
আজ শুক্রবার বাদ জুমা গাজীপুর চৌরাস্তা ঈদগাহ মাঠে সাংবাদিক তুহিনের জানাজার নামাজ হওয়ার কথা রয়েছে।
