শাসনব্যবস্থায় গুণগত পরিবর্তন ও নির্বাচন ড. শাহরিয়ার ইফতেখার ফুয়াদ

রাজনীতি

রিপোর্টার : জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশে প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ইউনুস এর নেতৃত্বে একটি দল নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। দেশের গণ মানুষের আকাঙ্ক্ষার আলোকে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যাপক ভিত্তিক সংস্কারের জন্য সংস্কার কমিশন গঠন করেন। ইতিমধ্যে প্রায় সবগুলো কমিশন তাদের রিপোর্ট জমা দিলেও তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে দেশের মানুষের মধ্যে উৎসাহের কমতি নেই। একটি রক্তস্নাত অভ্যুত্থানের পরে দেশের মানুষের মনে পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা ব্যাপকভাবে সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি দেশের সাধারণ মানুষের মনে বর্তমান সরকারের ভবিষ্যৎ সাফল্য নিয়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠারও অন্ত নেই। মানুষের মনে এখন নানা প্রশ্ন। বর্তমান সরকার তার সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনায় সফল হবে কিনা ? বিশ্বে আমরা মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবো কিনা ? পরবর্তী নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা একটা সুস্থ গণতান্ত্রিক পরিবেশে ফিরে যেতে পারব কিনা ? এসব প্রশ্ন মানুষের মনে বারবার ঘুরে ফিরে আসছে। বিগত ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারী সরকার দীর্ঘ ১৬ বছরে দেশকে গুম, খুন, দুর্নীতি, লুটপাট, অন্যায়- অবিচারের মাধ্যমে যেভাবে দেশকে নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দিয়েছিল, সেই ১৬ বছরের জঞ্জাল থেকে বেরিয়ে আসার যে চ্যালেঞ্জ এই সরকার কাঁধে নিয়েছে তা সফলতার মুখ দেখবে কিনা?
আমরা সাফল্য দেখতে চাই। সংস্কার কার্যক্রম সফল করার জন্য আমাদের সবাইকে সচেষ্ট ও সতর্ক থাকতে হবে। সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনার শেষ দেখার জন্য আমাদের ধৈর্য সহকারে অপেক্ষা করতে হবে। যদি আমরা সংস্কার কার্যক্রমে যথাযথভাবে সহযোগিতা করতে ব্যর্থ হই। যদি আমরা জাতীয় নির্বাচন নিয়ে অকারণে তাড়াহুড়ো করি। তাহলে সংস্কার কার্যক্রমে মানুষ যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিল তা দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে। নির্বাচনের নামে আবার সবাই পুরনো খেলায় মেতে উঠবে। নির্বাচনে পেশি শক্তির ব্যবহার, টাকার খেলা পুনরায় শুরু হবে। ঘাপটি মেরে থাকা পুরনো ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারের দোসররা আবার নবরূপে ফিরে আসবে। যদি আমরা সংস্কার কার্যক্রমকে সার্বিকভাবে সফল দেখতে চাই। যদি আমরা মনে – প্রানে আমাদের দেশের শাসনব্যবস্থার গুণগত পরিবর্তন প্রত্যাশা করি তবে আমাদেরকে সংস্কার কমিটির রিপোর্ট চূড়ান্তকরন ও এর যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমাদের ভূখন্ডের উপযোগী একটি নতুন শাসনতান্ত্রিক কাঠামোয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার গুণগত উন্নয়নই জনগণের প্রত্যাশা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *